মহান শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে শহীদ মিনারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে র্যাব। সংস্থাটি জানিয়েছে, নিষিদ্ধঘোষিত কোনো দল বা সংগঠনের সদস্যরা যাতে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে, সে জন্য তারা তৎপর রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) র্যাব সদর দপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সহকারী পরিচালক এএসপি মুত্তাজুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিতে আসা হাজারো মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র্যাব বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে।
তিনি আরও জানান, এ বছর শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে আসা বিভিন্ন জনগণের জন্য কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পাশাপাশি, প্রধান উপদেষ্টা শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন এবং দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে বিশেষ ব্যবস্থার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
২১ ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের নানা অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার স্বার্থে র্যাবসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা এবং স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করে কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা:
এএসপি মুত্তাজুল ইসলাম জানান, ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে সাদা পোশাকধারী গোয়েন্দা
সদস্যদের নজরদারি বাড়ানো হয়েছে এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে
সমন্বয় করে শহীদ মিনার এবং এর আশপাশে পর্যাপ্ত চেকপোস্ট ও অবজারভেশন পোস্ট
স্থাপন করা হয়েছে। শহীদ মিনারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য র্যাবের বম্ব
ডিসপোজাল ইউনিট ও ডগ স্কোয়াড বিশেষ সুইপিং সম্পন্ন করবে।
এছাড়া, যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য র্যাবের স্পেশাল ফোর্স সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকবে। সারা দেশে শহীদ মিনারমুখী রাস্তার মোড়ে চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়েছে এবং সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের তল্লাশির মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।
মহিলা ও শিশুদের নিরাপত্তা এবং সাইবার নজরদারি:
বিশেষভাবে মহিলা ও শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে, শহীদ মিনারের বিভিন্ন
অনুষ্ঠানস্থলে ইভটিজিং বা অন্যান্য হয়রানি প্রতিরোধে সতর্ক দৃষ্টি রাখা
হবে। র্যাব সাইবার মনিটরিং টিমও অনলাইনে গুজব, উসকানিমূলক তথ্য ও মিথ্যা
প্রচার প্রতিরোধে সার্বক্ষণিক নজরদারি চালাবে।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ:
র্যাবের সদর দপ্তরে একটি কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে ঢাকাসহ সারা দেশের
নিরাপত্তা ব্যবস্থা মনিটর করা হবে এবং প্রয়োজনীয় সমন্বয় সাধন করা হবে।
র্যাবের ব্যাটালিয়নগুলো নিজেদের অধিক্ষেত্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার
পাশাপাশি স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং জনপ্রতিনিধির সঙ্গে
সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করবে।
জনগণের প্রতি আহ্বান:
র্যাব জনগণের কাছে আহ্বান জানিয়েছে, মহান শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক
মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তা বজায় রাখতে সবাইকে সচেতন থাকতে
হবে। যদি কোনো বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়, তাহলে স্থানীয় র্যাব ব্যাটালিয়ন
অধিনায়ক অথবা টহল ইনচার্জের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। র্যাব জনগণের
সহযোগিতা কামনা করেছে এবং তাদের প্রতি যথাযথ সহযোগিতা প্রদানের অনুরোধ
জানিয়েছে।